Quantcast
Channel: অপরাধ জগৎ – CholtiPotro
Viewing all articles
Browse latest Browse all 45

ফেসবুকে পরকীয়া প্রেম ! আইন কি বলে ?

$
0
0

ছেলেটির নাম মনি। মেয়েটি তারিন। মেয়েটি বিবাহিত কিন্তু ছেলেটি অবিবাহিত। ফেসবুকে পরিচয়ে বন্ধুত্ব, এরপর ধীরে ধীরে সেই বন্ধুত্ব পৌঁছালো প্রেমে। সময় পেলেই দুজন ম্যাসেঞ্জারে চ্যাটিংয়ে ডুবে থাকেন তারা। একদিন মনি তারিনের সঙ্গে দেখা করতে চাইলো। একদিন বাসা ফাঁকা থাকায় সুযোগ বুঝে তারিন ছেলেটিকে বাসায় ডেকে আনলেন। দীর্ঘ আড়াই ঘণ্টা তারা সময় কাটালেন। এরপর অবশ্য বাসা ফাঁকা থাকলে প্রায়ই মনি তারিনের বাসায় যাতায়াত করতো।

এরপর একদিন তাদের মধ্যে চ্যাটিং হচ্ছে,

‘হ্যালো, তারিন তোমার মন খারাপ? এতো দেরি করে রিপ্লাই দাও কেন? মন মানে না, জানু পাখি। তোমাকে ছাড়া এক মুহূর্তও ভালো লাগে না। আমার সারাক্ষণ শুধু তোমার নাম ধরে ডাকতে ইচ্ছা করে।

মনি ধীরে ধীরে লিখলো- শুধুই কি ডাকতে ইচ্ছা করে? আর কিছু না?

-কী ডাকতে ইচ্ছা করে?

জানু, জানু পাখি। সারাক্ষণ শুধু ডাকতেই ইচ্ছা করে প্রিয় তারিন। কিন্তু তারপরেও যে আমার তৃষ্ণা মেটে না।

-তোমার তৃষ্ণা মেটে কীসে?

তুমি জানো না? তোমাকে কতগুলো চুমু খেয়েছি জানো। মোট ৮২০টা। তারপরেও তৃষ্ণা মেটে না। প্রতিটি চুমুর পর নতুন তৃষ্ণা জাগে। প্রতিটি চুমুই মনে হয় নতুন। এভরি লাস্ট কিস ইজ ফার্স্ট কিস।

-বাহবা! প্রতিটি চুমু তুমি গুণে রেখেছো? এতো ভালোবাসো আমায়?

শুধুই কী চুমু গুণে রেখেছি। ছোট অভিসার, গভীর অভিসার। তোমার সবচেয়ে সুন্দর কি জানো?

-কী?

পামেলা অ্যন্ডারসান ফেইল।

-তাই নাকি? সব হিসাব করে রেখেছো?

হুম। সব করে রেখেছি গো সব।’

উপরোক্ত চ্যাটিংয়েই বোঝা যায় পরকীয়া প্রেম কতটা ভয়ানক হতে পারে।পরকীয়া শব্দটির সঙ্গে এখনকার ছোট-বড় সবাই পরিচিত। বর্তমানে পরকীয়া সংসার জীবনের জন্য ভয়াবহ মহামারীতে রূপ নিয়েছে।

পরকীয়ার ইংরেজি শব্দ Adultery বা Extramarital affair বা Extramarital sex হল বিবাহিত কোন ব্যক্তির (নারী বা পুরুষ) স্বামী বা স্ত্রী ছাড়া অন্য কোনো ব্যক্তির সঙ্গে বিবাহোত্তর বা বিবাহবহির্ভূত প্রেম, যৌন সম্পর্ক ও যৌন কর্মকাণ্ড স্থাপন করা। মানবসমাজে এটি লঘু বা গুরুভাবে নেতিবাচক হিসেবে গণ্য। পাশ্চাত্য আধুনিক সমাজে এর প্রতি নেতিবাচক মনোভাব বজায় থাকলেও এটি আইনত অপরাধ বলে বিবেচিত হয় না, তবে অভিযোগ প্রমাণিত হলে পরকীয়াকারী ব্যক্তির বিবাহিত সঙ্গী তার সাথে বিবাহবিচ্ছেদের জন্য কোর্টে আবেদন করতে পারেন। তবে ইসলামি রাষ্ট্রসমূহে এর জন্য কঠোর শাস্তির বিধান রয়েছে, যা হল পাথর নিক্ষেপ করে মৃত্যুদণ্ড প্রদান।

মনোচিকিৎসায় একথা স্বীকৃত যে, পিতামাতার পরকীয়া সন্তানের মানসিক স্বাস্থ্যের উপর এবং সামাজিক সম্পর্ক ও যোগাযোগে বিরূপ প্রভাব ফেলে এবং অধিকাংশ ক্ষেত্রেই তা সন্তানের মানসিক বিষণ্নতার ও আগ্রাসী মনোভাবের জন্ম দেয়।এছাড়া পারিবারিক ও দাম্পত্য সম্পর্কের অবনতিতে পরকীয়া প্রভাব রাখে।

পরকীয়ার একটি বিষাক্ত সম্পর্ক। একটি সুন্দর হাসিখুশি সুখের সংসার নিমিষেই গুঁড়িয়ে দেওয়ার ক্ষমতা রাখে এই পরকীয়ার সম্পর্ক। কেউ নিজের ইচ্ছায় এই বিষাক্ত সম্পর্কের পথে পা বাড়ান আবার কেউ মনের অজান্তেই জড়িয়ে পড়েন। মনের মত স্বামী/স্ত্রী না পেলে অনেকে স্বেচ্ছায় পরকীয়া করেন। আবার, ঘরের স্বামী/স্ত্রীর কাছ থেকে অবহেলার শিকার হয়ে মনের অজান্তেই অন্য কারো সঙ্গে পরকীয়ার সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েন অনেকে। পরকীয়ার বিষ সংসারে ঢুকলে সুখ শান্তি কিছুই আর অবশিষ্ট থাকে না।

পরকীয়ার আইন

দণ্ডবিধি আইনের ৪৯৭ ধারায় ব্যভিচারের শাস্তির উল্লেখ করা হয়েছে। এ আইনে বলা হয়েছে, যদি কোনো ব্যক্তি অন্য লোকের স্ত্রী জানা সত্ত্বেও বা সেটা বিশ্বাস করার অনুরূপ কারণ রয়েছে এমন কোনো নারীর সঙ্গে স্বামীর সম্মতি ব্যতীত যৌন সঙ্গম করেন এবং অনুরূপ যৌন সঙ্গম যদি ধর্ষণের অপরাধ না হয়, তাহলে সে ব্যক্তি ব্যভিচারের দায়ে দায়ী হবেন, যার শাস্তি সাত বছর পর্যন্ত যে কোনো মেয়াদের সশ্রম বা বিনাশ্রম কারাদণ্ডে অথবা অর্থদণ্ডে অথবা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত করা যাবে। এ ক্ষেত্রে নির্যাতিতাকে অন্য লোকের স্ত্রী হতে হবে। তবে মজার ব্যাপার হচ্ছে এই যে, ব্যভিচারের ক্ষেত্রে স্ত্রীলোকের কোনো শাস্তির বিধান আইনে নেই। ওই স্ত্রীলোকটি যে দুষ্কর্মের সহায়তাকারিণী বা ব্যভিচারের অপরাধে দোষী অথচ তিনি কোনো সাজা পাবে না। এ বিষয়ে মহামান্য লাহোর হাই কোর্ট একটি নজিরবিহীন সিদ্ধান্ত দিয়েছে, যা পাকিস্তান লিগ্যাল ডিসিশন, ১৯৭৪ সন্নিবেশিত রয়েছে। মহিলা আসামি হতে পারে না। তবে ওই পুরুষটির সাজা দিতে হলে অভিযোগকারীকে অবশ্যই প্রমাণ করতে হবে যে, ওই মহিলার সঙ্গে যৌন সঙ্গম করার সময় আসামি জানত অথবা জানার যুক্তিসঙ্গত কারণ ছিল যে, যৌন সঙ্গমকারী মহিলা অপর কোনো ব্যক্তির স্ত্রী। উল্লেখ থাকে যে, কোনো মহিলাকে তার আগের স্বামী তালাক দিয়েছেন এই সরল বিশ্বাসে আসামি বিবাহ করলে তাকে এ ধারার অধীন দোষী সাব্যস্ত করা যায় না। আরও মজার ব্যাপার হচ্ছে, যে মহিলার সঙ্গে যৌন সঙ্গম করা হয় সে মহিলা ওই সময় বিবাহিত না হলে এই ধারার অধীনে কোনো অপরাধ আমলে আনা যায় না। এ ধারার অধীন শাস্তি দিতে হলে বিবাহের বিষয়টি যথাযথভাবে প্রমাণ করতে হয়।

The post ফেসবুকে পরকীয়া প্রেম ! আইন কি বলে ? appeared first on CholtiPotro.


Viewing all articles
Browse latest Browse all 45

Trending Articles